"বিয়ে তো জীবনে একটাই’’
‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ এ কথা বলে আমাদের সমাজে বিবাহ সংক্রান্ত অনেক অন্যায় অপরাধকে সামাজিক বৈধতা দেয়া হয়। মেয়ে দেখা থেকে শুরু করে ওলীমা/বৌভাত পর্যন্ত শত শত অন্যায় অপরাধকে ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ বলে খুব সহজে মেনে নেয়া হয়। বে-পর্দা, বেহায়াপনা, নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা, মদ্যপান এবং হিন্দুয়ানী বিভিন্ন রসম রেওয়াজকে ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ বলে বৈধতা দেওয়া হয়। উঠতি বয়সী পোলাপানের অনেক অন্যায় আবদার পুরা করা হয়। মদপান করতে পর্যন্ত টাকা দেয়া হয়।
নামকা ওয়াস্তের মুসলমানদের কথা বাদই দিলাম। তারাতো আর আখেরাত ও শরীয়তের ধার ধারে না। তারা যেমন খুশি তেমন চলবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের সমাজে যারা প্রাক্টিসিং মুসলিম তাদের অনেকেও বিয়ের মধ্যে হাজারো রসম-রেওয়াজ পালন করে।
এমনকি যে কওমী মাদরাসা পড়ুয়াদেরকেই আমরা সাধারণত দ্বীনদার শ্রেণীর মধ্য থেকে প্রথম শ্রেণীর দ্বীনদার মনে করে থাকি। তাদের অনেকের বিয়েতেও গায়ে হলুদ করা হয়, ছবি তোলা হয়, ভিডিও করা হয়। ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ নামক ইমোশনাল কথাটা বলেই তারা এসব করে।
দ্বীনের হাকীকী বুঝ কম থাকায় কওমী মাদরাসার অধিকাংশ ছাত্রীও এমন বিয়েই আশা করছে, যে বিয়েতে জমকালো গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান হবে, বিউটি পার্লারে গিয়ে রাজকীয় (?) সজ্জা গ্রহণ করা হবে, চোখ ধাঁধাঁনো লাইটিং করা হবে, কমিউনিটি সেন্টারে বিশাল আয়োজন করে, গানবাদ্য বাজিয়ে মানুষকে খাওয়ানো হবে ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কতো অন্যায় আকাঙ্ক্ষা!।
আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন এবং এমন মুসলিম হতে চান যেমনটা হওয়া আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আপনার থেকে আশা করেন, তাহলে আপনাকে সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় ইসলামের সমস্ত বিধান ফলো করতে হবে। বিয়ে একবার করেন কিংবা দশবার করেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু এ জাতীয় ইমোশনাল কথা বলে শরীয়তগর্হিত কাজ করা, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া এবং নিজের সামনে ঘটতে থাকা অগনিত হারামকে মেনে নেয়ার কোনো সুযোগ শরীয়তে নেই।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামে দাখেল হতে বলেছেন। তাই আমাকে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হতে হবে। আল্লাহর সমস্ত বিধান সর্বাবস্থায় পালন করতে হবে। আচ্ছা ধরমাল, বিয়ে আপনি জীবনে একটাই করলেন, একবারই করলেন।
আর সেই একবারই যদি সমস্ত হারাম আর অন্যায়কে মিশ্রণ করে করেন, তাহলে বিষয়টা কেমন হবে? আপনার জীবনের মহান একটা কাজের সূচনাই হল হারামের মিশ্রণে। আপনি যদি ‘‘বিয়ে তো জীবনে একটাই’’ এর প্রবক্তা হোন, তাহলে তো এটা শুধরানোরও কোনো সুযোগ আপনার থাকবে না।
আপনি একটা বিয়েই করলেন, আর সেটা সমস্ত হারামের মিশ্রণেই করলেন, ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না! আল্লাহ তাআলার বান্দা হিসাবে আপনার আমার জন্য কিন্তু বিষয়টা খুবই খারাপ হল। তাই হে প্রিয় ভাই ও বোন! আপনি জীবনে বিয়ে একটা করেন কিংবা একাধিক করেন, আপনি যেহেতু আল্লাহর বান্দা, তাই আপনাকে অন্যান্য কাজের মত বিয়েটাও পরিপূর্ণরূপে শরীয়তের সীমার ভিতর থেকেই করতে হবে।
কোনোভাবে কোনো বাহানাতেই বিয়েতে শরীয়তগর্হিত কোনো কাজ করা যাবে না, অন্যকেও করতে দেওয়া যাবে না। আপনি নিজেও করবেন না, আপনার ভাই-ব্রাদারকেও করতে দিবেন না।
‘আমার বিয়েটা পরিপূর্ণরূপে কুরআন-সুন্নাহের আলোকে হোক, নবীজী সা. এবং সাহাবায়ে কেরাম রাযি. এর বিয়ের মত সাদামাটাভাবে হোক’
এমন মানসিকতাসম্পন্ন যুবক-যুবতীর আজ খুব অভাব। মুসলিম হয়েও বিয়ের ইসলামী রীতি-নীতিতে আমরা বিশ্বাসী হচ্ছি না; বিয়ে সম্পর্কীয় ইসলামের দিকনির্দেশনা আমরা মেনে চলছি না।
উল্টো হিন্দি সিরিয়াল আর সিনেমায় দেখা হিন্দুদের বিয়ের নানান রসম-রেওয়াজ পালনে আমরা প্রতিযোগিতা করছি, বর্গবোধ করছি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাজত করেন। জীবনের সর্বক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে মেনে চলার তাওফীক দান করেন। আমীন।
আমাদের নিয়মিত ব্লগগুলো পড়তে ক্লিক করুন এই লিংক এ: https://e-kazi.com/blog/list
বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত যে কোনো আইন বা জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা বা পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করুন আমাদের কনসালট্যান্ট এর সাথে।
অফিস এর ঠিকানা:
e-kazi
Confidence Tower, Shahjadpur Bus-Stand, Gulshan, Dhaka-1212
হটলাইন: 01716159764
ওয়েবসাইট: https://www.e-kazi.com/
ইমেইল: info@e-kazi.com