Top

Welcome to e-Kazi Portal

Mail :
info@e-kazi.com
Call Us :
+8801716159764
সুখী দাম্পত্যের মূলমন্ত্র সততা ও বিশ্বস্ততা

সুখী দাম্পত্যের মূলমন্ত্র সততা ও বিশ্বস্ততা

আল্লাহতায়ালা সুখ-শান্তির জন্য পরিবার দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে পারিবারিক জীবন বহু মানুষের মাথাব্যথার কারণ। বরং কারও কারও জন্য অশান্তির জ্বলন্ত গহ্বর। ফলে পরিবার থেকে অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সমস্যার গোড়া কোথায়? আসলে ভোগবাদ এ সমস্যার মূল কারণ। ভোগের সমাজ তা অশান্তি এবং জাহান্নামের গর্ত বানিয়ে দিচ্ছে। কারণ, ভোগের জন্য দরকার বস্তু। বিপত্তি হলো, ভোগের জন্য দুনিয়ার সমুদয় সম্পদও সামান্য। তাই এর সমাধানের জন্য নীতি দরকার। যে নীতির আলোকে মানুষ তার ভোগের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। আধুনিক অর্থনীতিকে অনেকেই ভোগবাদের অর্থনীতি মনে করেন। ভোগবাদী ব্যক্তি যখন শান্তি তালাশ করে, তখন তার জন্য উপকরণ দরকার হয়। আমরা জানি, উপকরণ বহিরাগত জিনিস। যা সব সময় ব্যক্তির আয়ত্তাধীন নয়। চাইলেই পাওয়া যায় না। এর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তারপরও বেলা শেষে শূন্য হাতে ফিরতে হয় অনেককে। অপরদিকে তার তো শান্তি ও সুখ দরকার। এভাবে শান্তি তালাশ করতে করতে অশান্তির আগুনে জীবনটা একসময় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে দেয়। তবু অধরায় থেকে যায় তার শান্তির সোনার হরিণ। নিজের সুখের সন্ধান না পাওয়ার ফলে পরিবার তখন অতিরিক্ত অশান্তির শূল হয়ে দেখা দেয়। কারণ, টাকা দিয়ে খাট কেনা যায়, ঘুম তো কেনা যায় না। বাড়ি কেনা যায়, নিরাপত্তা তো কেনা যায় না।

সুখী পরিবারের অর্থনৈতিক ধারণা

মানুষের নিজের ভেতরেই লুকিয়ে রাখা আছে এ শান্তি। আল্লাহতায়ালা রেখেছেন। যা উপকরণের মধ্যে তালাশ করে পাওয়া যায় না। সুতরাং সেখান থেকেই তালাশ করে নিতে হবে। চিন্তা-চেতনা, মন-মনন, আকিদা-বিশ্বাস ও সঠিক কর্ম-পদ্ধতি অনুসরণের মাধ্যমে তা অর্জন করা যায়। পরিবার বর্জন বা ত্যাগ করার মধ্যে সমাধান নেই। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তার নিদর্শন হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদেরই মধ্য হতে স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে শান্তি লাভ করো এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম : ২১)। সুতরাং পরিবারে শান্তি পেতে হলে বস্তু ও জীবিকা সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও যথাযথ কর্মপন্থা অবলম্বন করতে হবে। নিজের আয়-ব্যয় ও জীবিকা সম্পর্কে বিশুদ্ধ নীতি ও বিশ্বাস তৈরি করতে হবে। এমন কিছু নীতি সম্পর্কে ১. বিশ্বাস শুদ্ধ করুন

আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করুন এবং ভারহীন ও দুঃশ্চিন্তামুক্ত থাকুন। আমাদের যত প্রয়োজন আছে, তা পূর্ণ করার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদও তিনি দান করেছেন। সম্পদ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকা অশান্তির অন্যতম কারণ। আপনি আর কতটা উপার্জন করবেন? আপনার শ্রম, সময় ও মেধার সঙ্গে জোগানের আনুকূল্য না হলে হতাশা ও নিরাশা আপনাকে গ্রাস করতে থাকবে। নিজের কাছেই নিজেকে অর্থহীন মনে হবে। পরিবারের সদস্যরাও অকর্মা জ্ঞান করবে। তাই আগে বিশ্বাসের পরিবর্তন আনতে হবে। নিজের মধ্যে এবং নিজের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে স্থিতিশীল বিশ্বাস ও আকিদা প্রোথিত করুন।

ভোগ নয়, ত্যাগেই শান্তি- এ চেতনা ও বিশ্বাসে উদ্দীপ্ত হতে হবে।

আল্লাহতায়ালা আনসারি সাহাবিদের প্রশংসা করে বলেন, ‘তারা তাদের (মুহাজির সাহাবিদের) নিজেদের ওপর প্রাধান্য দেয়, যদিও তাদের অভাব-অনটন থাকে।’ (সুরা হাশর : ৯)।

রিজিক আল্লাহর হাতে। তাই আল্লাহর কাছে চাওয়া ও দোয়া করার অভ্যাস করুন। পরিবারের সদস্যদের আল্লাহমুখী করুন। মদিনার আশআরি গোত্রের লোকেরা মুসলমান হওয়ার পর হিজরত করে মদিনায় যাওয়ার জন্য রওনা হয়। কিন্তু পথিমধ্যে খাদ্য ফুরিয়ে যায়। তখন তারা এক ব্যক্তিকে নবীজি (সা.)-এর কাছে প্রেরণ করল। যেন সে তার কাছ থেকে সবার জন্য খাদ্য নিয়ে আসতে পারে। সে লোকটি মদিনায় এসে দেখল, রাসুল (সা.) এ আয়াত তেলাওয়াত করে শোনাচ্ছেন, ‘ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই, যার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ নিজ দায়িত্বে রাখেননি।’ (সুরা হুদ : ৬৯)। লোকটি তখন মনে মনে বলল, আশআরি লোকেরা তো আল্লাহর কাছে বড় কোনো মাখলুক নয়! যাদের রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহর জন্য কঠিন কিছু! তখন সে কাউকে কিছু না বলে কাফেলার কাছে ফিরে গেল। বলল, ‘তোমাদের জন্য সুসংবাদ। সবার জন্য পর্যাপ্ত সাহায্য এসে গেছে।’ সবাই মনে করল, নবীজি (সা.) বড় কোনো সাহায্য প্রেরণ করছেন হয়তো। হঠাৎ দুজন অপরিচিত লোক এলো। তাদের সঙ্গে ছিল বড় একটি থালা ভর্তি রুটি ও মাংস। সবাই সেখান থেকে পরিতৃপ্ত হয়ে খেয়ে অবশিষ্ট খাবার নবীজি (সা.)-এর কাছে ফেরত দিতে মনস্থ করল। তারা তাদের বলল, ‘তোমরা অবশিষ্ট খাবার নবীজি (সা.)-এর কাছে ফেরত দিয়ে দিও। হয়তো কারও প্রয়োজন হবে। কাফেলা মদিনায় আসার পর নবীজি (সা.)-এর কাছে গিয়ে তারা বলল, ‘আপনি আমাদের জন্য যে উত্তম ও সুস্বাদু খাবার পাঠিয়েছিলেন, এমন খাবার আমরা আগে কখনও খাইনি।’

নবীজি (সা.) বললেন, ‘এমন কোনো খাবার তো আমি পাঠাইনি!’ তখন লোকটি তার বিস্তারিত ঘটনা জানাল। নবীজি (সা.) বললেন, ‘তা ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের জন্য বিশেষ রিজিক।’ (তাফসিরে কুরতুবি : ৯/৭)।

ধৈর্য ও সহনশীলতা অর্জন করুন। নবীজি (সা.) বলেন, ‘হে লোকসব! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তমভাবে রিজিক অন্বেষণ করো। কোনো প্রাণি তার জন্য বরাদ্দ রিজিক সমাপ্ত করার আগে কখনোই মৃত্যুবরণ করবে না, যদিও কিছুটা বিলম্ব হয়। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো ও উত্তম পন্থায় রিজিক উপার্জন করো। যা হালাল, তা গ্রহণ করো। আর যা হারাম, তা বর্জন করো।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৭৫৬)।

কৃতজ্ঞতা ও শোকর আদায় করুন। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যারা তোমাদের চেয়ে নিম্নবিত্ত, তোমরা তাদের দিকে দৃষ্টি রাখবে। আর তোমাদের চেয়ে অধিক সম্পদশালীদের দিকে তাকাবে না। এ পদ্ধতি তোমাদের জন্য আল্লাহর নেয়ামতের অকৃতজ্ঞতা না করার অধিক সহায়ক।’ (মুসলিম : ২৯৬৩)।মৌলিক কয়েকটি উদ্যমের সঙ্গে রিজিক তালাশ করুন। আপনার সময়, মেধা ও শ্রম আল্লাহপ্রদত্ত বিশেষ নেয়ামত। এগুলো যথাযথ ও পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করুন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিজের কাঁধে লাকড়ির বোঝা বহন করে বিক্রি করে উপার্জন করা কারও কাছে চেয়ে খাওয়ার তুলনায় অনেক উত্তম।’ (বোখারি : ১৪৭০)।

২. কর্মপদ্ধতি ঠিক করুন

অশান্তির আরেকটি বড় কারণ, অনিয়ন্ত্রিত আয়-ব্যয়। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন ও পরিবারের জন্য নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি থাকতে হবে। শুধু উপার্জনের জন্য সব সময় ব্যয় করা যাবে না। পরিবারের জন্যও সময়ের বরাদ্দ রাখুন। সময়কে পরিবারের পেছনে বিনিয়োগ করুন। আল্লাহপ্রদত্ত সম্পদ উপার্জন করার জন্য সঠিক উপায় অবলম্বন করতে হবে। সঠিকভাবে ব্যবহার করা জানতে হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তোমাদের জন্য ভূমিকে অধীন করে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা তার ওপর চলাফেরা করো ও তাঁর দেয়া রিজিক খাও।’ (সুরা মুলক : ১৫)। সুতরাং জমিনের বুকে আল্লাহতায়ালা রিজিক ছড়িয়ে রেখেছেন। আমাদের সেখান থেকে রিজিক আহরণ করে নিতে হবে।

৩. পরিবারের অর্থনীতি ঠিক করুন

ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো, মূল থেকে সংশোধন ও সমাধান করা। অর্থনীতির ক্ষেত্রেও তাই। বিশ্বাসেরও অর্থনীতি আছে। চাহিদা ও প্রয়োজনবোধ মানুষের বিশ্বাস ও বুঝ থেকে সৃষ্টি হয়। এরপর সে অনুযায়ী মানুষ বরাদ্দ রাখে ও শ্রম ব্যয় করে। একটি মুসলিম পরিবারের অর্থনৈতিক বিশ্বাস কেমন হতে হবে? সে বিশ্বাসে কী কী ধরনের চাহিদা থাকবে এবং কী কী ধরনের চাহিদা থাকবে না? স্ত্রী-শিশুসহ অন্য সদস্যদের কোন প্রয়োজনগুলো গুরুত্বপূর্ণ, তাদের চাহিদাগুলোতে ইসলামি নির্দেশনার প্রতিফলন ঘটছে কি-না, এসব বিষয় ঠিক করতে হবে।

বিয়ে ও তালাক সংক্রান্ত যে কোনো আইন বা জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা বা পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করুন আমাদের কনসালট্যান্ট এর সাথে।

কাজী অফিস এর ঠিকানা:

Confidence Tower

Shahjadpur Bus-Stand, Gulshan, Dhaka-1212

হটলাইন: 01716159764

ওয়েবসাইট: https://www.e-kazi.com/

ইমেইল: info@e-kazi.com

Our Blog